বুধবার, ২৯ মে, ২০২৪

এমপি আনার হত্যা: তদন্তাধীন মামলায় গণমাধ্যমে বক্তব্য দেয়া বন্ধ চেয়ে আইনি নোটিশ

কলকাতার সঞ্জিভা গার্ডেন্সের যে ফ্ল্যাটে আনার খুন হন, মঙ্গলবার (২৮ মে) স্থানীয় সময় সন্ধ্যার কিছু আগে, সেই বাসার সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার হয় চার কেজিরও বেশি মাংসখণ্ড, চুল ও হাড়ের গুঁড়া। ফাইল ছবি


ডেস্ক রিপোর্ট: হাইকোর্টের রায়ের আলোকে এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যা মামলাসহ তদন্তাধীন মামলায় গণমাধ্যমে বক্তব্য দেয়া বন্ধ চেয়ে সরকারকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের আইজি ও ঢাকার পুলিশ কমিশনারকে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

বুধবার (২৯ মে) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুহাম্মদ শিশির মনির এ নোটিশ পাঠান।

নোটিশে বলা হয়েছে, ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার ভারতের পশ্চিমবঙ্গে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে গিয়ে নিখোঁজ হন। গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী তিনি নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। আজ অবধি তার মরদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি জনমনে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ও ভারত সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত পরিচালনা করছে।

অন্যদিকে ইলেকট্রনিক, প্রেস ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রিয়েল টাইম আপডেট প্রচার করা হচ্ছে। সাংবাদিকরা নানা ধরনের প্রশ্ন করছেন। কর্তৃপক্ষ গণমাধ্যমের সামনে উত্তর প্রদান করছে। এতে ছোটখাটো অনেক বিষয় উঠে আসছে। যা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম পছন্দ অনুযায়ী হেডলাইন করছে। ফ্রিল্যান্সার ব্যক্তিরা খণ্ডাংশ উল্লেখ করে ইউটিউব, ফেসবুক, টিকটকসহ জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্প্রচার করছেন। এ বিষয়ে হরেক-রকম বিভ্রান্তিও তৈরি হচ্ছে।

এ বিষয়ে হাইকোর্ট বিভাগ আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি বনাম রাষ্ট্র (৩৯ বিএলডি ৪৭০) মামলায় প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন।

হাইকোর্ট বলেছেন, বিভিন্ন আলোচিত অপরাধের তদন্ত চলাকালীন পুলিশ, র‌্যাবসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গ্রেফতার অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্ট আদালতে হাজির করার আগেই বিভিন্নভাবে গণমাধ্যমের সামনে উপস্থাপন করা হয়, যা অনেক সময় মানবাধিকারের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে অমর্যাদাকর ও অঅনুমোদনযোগ্য এবং বিভিন্ন মামলার তদন্ত সম্পর্কে অতি উৎসাহ নিয়ে গণমাধ্যমের সামনে ব্রিফিং করা হয়ে থাকে।

আমাদের স্মরণ রাখতে হবে, যতক্ষণ পর্যন্ত আদালতে একজন অভিযুক্ত বিচার প্রক্রিয়া শেষে সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে দোষী সাব্যস্ত না হচ্ছেন ততক্ষণ পর্যন্ত চূড়ান্তভাবে বলা যাবে না যে তিনি প্রকৃত অপরাধী বা তার দ্বারাই অপরাধটি সংঘটিত হয়েছে।

গণমাধ্যমের সামনে গ্রেফতার কোনো ব্যক্তিকে এমনভাবে উপস্থাপন করা সঙ্গত নয় যে, তার মর্যাদা ও সম্মানহানি হয় এবং তদন্ত চলাকালে অর্থাৎ পুলিশ রিপোর্ট দাখিলের আগে গণমাধ্যমে গ্রেফতার কোনো ব্যক্তি বা মামলার তদন্ত কার্যক্রম সম্পর্কে এমন কোনো বক্তব্য উপস্থাপন সমীচীন নয়, যা তদন্তের নিরপেক্ষতা নিয়ে জনমনে বিতর্ক বা প্রশ্ন সৃষ্টি করতে পারে।

নোটিশে বলা হয়েছে, হাইকোর্টের রায়ের আলোকে গণমাধ্যমে তদন্তাধীন মামলার বিষয়ে বক্তব্য প্রচার বন্ধ না করলে উচ্চ আদালতে রিট করা হবে।

গেলো ১২ মে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে কলকাতায় যান ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার। কলকাতার অদূরে বরাহনগরে বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে এক রাত থাকার পর ১৩ মে দুপুর থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন তিনি। ১৮ মে সংশ্লিষ্ট থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন তার বন্ধু। এর পর ২২ মে সিআইডি জানায়, নিউটাউনের সঞ্জিভা গার্ডেন্সের ৫৬-বিইউ ফ্ল্যাটে এমপি আনার খুন হয়েছেন।

এদিকে কলকাতার সঞ্জিভা গার্ডেন্সের যে ফ্ল্যাটে আনার খুন হন, মঙ্গলবার (২৮ মে) স্থানীয় সময় সন্ধ্যার কিছু আগে, সেই বাসার সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার হয় চার কেজিরও বেশি মাংসখণ্ড, চুল ও হাড়ের গুঁড়া।

মুহূর্তের মধ্যে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে খবরটি। তার কিছুক্ষণ পরই আনুষ্ঠানিকভাবে এ তথ্য নিশ্চিত করেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্তি পুলিশ কমিশনার হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, এগুলো আনোয়ারুল আজিমের কি-না, তা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় ফরেনসিক ল্যাবে। আর ডিএনএ পরীক্ষার জন্য আজ (বুধবার) এমপিকন্যা ডরিন কলকাতায় যেতে পারেন বলে জানান তিনি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এমপি আনার'র হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবীতে ঝিনাইদহে মানববন্ধন

রবিন মাহমুদ, ঝিনাইদহ ১১ জুন- ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের হত্যাকারীদের শনাক্ত ও তাদের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবীতে মানবব...